শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২০

তুরস্কের অভিনব পরীক্ষা পদ্ধতি ও পাঠদান কৌশল


বলেছিলাম, বিদেশে এসে পড়ালেখা কতদূর কি হলো তা নিয়ে আলাপ করবো। এর মাঝে বেশ কিছুদিন ধরে বিদেশে বিশেষ করে তুরস্কে পড়ালেখা কেমন কি হচ্ছে তা নিয়ে লিখতে বলছেন অনেকে। কিন্তু সময়, সুযোগ, ইচ্ছার সম্মিলন হচ্ছিলো না। যাক, অবশেষে কী-প্যাডে আঙ্গুল চালানোর ফুসরৎ হলো। এত এত গল্প যে কোনটা রেখে কোনটা বলবো তা নিয়েই দ্বিধায় পড়েছি, পরে ভাবলাম সংক্ষেপে ক্লাস এবং পরীক্ষা পদ্ধতির অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু আলাপ করি।
আমার বোকামীপূর্ণ এক পরীক্ষার গল্প দিয়েই শুরু করি, একজন তার্কিশ প্রফেসর সমুদ্র আইন বিষয়ক একটি টপিকের উপর টানা চারদিন দুই ঘন্টা করে ১৭৫টি স্লাইডের লেকচার শেষে দুইদিন সময় দিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা নিচ্ছেন। ৬টি প্রশ্ন, সময় ১ ঘন্টা, কিন্তু উত্তর লেখার জন্য পেইজ দিয়েছেন মাত্র ২টি। 
আমার তো প্রশ্ন দেখেই চোখ ছানাবড়া, একে তো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর ১ ঘন্টায় লেখা সম্ভব নয়, অন্যদিকে পেইজ দিয়েছে মাত্র ২টি। দেশে হলে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখতে আমাকে মিনিমাম ২৪ পৃষ্ঠা কাগজ দিতো। আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে, কিছু লেখার আগে প্রফেসরকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে কি আর কোনো এক্সট্রা পেইজ দেয়া হবে? নাকি এই ২ পেইজই?
প্রফেসরসহ ক্লাসের সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে, কাহিনী কি? বুঝলাম না। প্রফেসর বলতেছে তুমি পেপারের উপরে দেখো, লেখা আছে এক্সট্রা কোনো পেইজ দেয়া হবে না। ছয়টি বড় প্রশ্নের উত্তর, এই দুই পেইজে কিভাবে লিখবো বুঝতে উঠতে পারছিলাম না। 
তার উপর হচ্ছে ফাইনাল এক্সাম। কারণ দেশে তো এমন ফাইনাল এক্সামে ৪ ঘন্টা একবস্তা লিখে এসেছি। যাক, কোনো রকম মূল কথাগুলো লিখে শেষ করলাম, মনে মনে ভাবছি প্রথম পরীক্ষা, কোনো রকম পাশ করলেই হয়।
আর একটা জিনিস বুঝে গেলাম, এখানে মুখস্থ বিদ্যার খানা নাই। অবশ্যই পড়ালেখা করে নিজের ভিতর থেকে সামান্য হলেও কিছু ডেলিভারি দিতে হবে। ক্রিয়েটিভ হতে হবে। তবে এক্সাম শেষে ভাবতে ছিলাম, রেজাল্ট যেদিন দিবে, সেদিন ক্লাসে আসবোই না, কারণ লজ্জা পেতে চাই না। আসলে তখনো পর্যন্ত জানা ছিলো না এখানে রেজাল্ট সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে মেইল করে জানানো হয়, সবার রেজাল্ট একসাথে সবার সামনে দেয়া হয় না। সো, লজ্জা পাওয়ার সুযোগ নাই।
যখন কয়েকদিন পর মেইল করে জানানো হলো আমি এই এক্সামে ৭৮ মার্কস পেয়েছি, আমি তো মহাখুশি। আমাদের দেশে তো ৭৮ অনেক মার্কস। তখনো পর্যন্ত আমি আঙ্কারা ইউনিভার্সিটির গ্রেডিং সিস্টেম জানতাম না, বোকাসোকা হলে যা হয় আর কি! তাই সবাইকে রেজাল্ট ব্যক্তিগতভাবে জানালেও আমি খুশিতে এক ফ্রেন্ডকে নক দিয়ে বললাম আমি তো ৭৮ পেয়েছি, তুমি কত পেয়েছো?
সে আমাকে যে রিপ্লাই দিয়েছে, তা শুনে মুহুর্তেই ফুটা বেলুনের মতো চুপসে গেলাম। সে আমাকে বললো, তুমি এত কম মার্কস পেলে কেন, তোমার Class Performance তো ভালোই ছিলো, বললাম মানে? কম কিভাবে? আমি তো A পেয়েছি, যা 3.75 হয়, তাই নয় কি? সে হেসে আমাকে বলে এখানে তো ৩.৭৫ বলতে কোনো গ্রেডই নাই৷ এবার আমার হুশ হলো। তাড়াতাড়ি ইউনিভার্সিটির গ্রেডিং সিস্টেমে চোখ বুলিয়ে তো মাথায় হাত। 
কারণ আমার মার্কস ৭৮, যা C গ্রেড আর পয়েন্ট হচ্ছে ২.৫। তার্কির (আঙ্কারা ইউনিভার্সিটির) গ্রেডিং সিস্টেম হচ্ছে ৯০ এর উপরে পেলে ৪ পয়েন্ট, ৮৫-৮৯ পর্যন্ত হচ্ছে ৩.৫ পয়েন্ট, মানে এখানে ৩.৭৫ নাই। যাক, প্রথম পরীক্ষায় এমন ধরা খেয়ে পরের এক্সামে ৯২ তুলতে পেরেছিলাম, তাও চরম খাটাখাটুনির ফলশ্রুতিতে। আর এই সেমিস্টারে তো আল্লাহর ইচ্ছা ৪.০০ এ ৪.০০ এসেছে। আলহামদুলিল্লাহ। চামে চামে নিজের ঢোল পিটিয়ে দিলাম। 
যাইহোক, মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির শিক্ষার্থীদেরকেও ওরা যে কেমন খাটায়, আরেকটা উদাহরণ দিলে বুঝবেন, একজন আমেরিকান প্রফেসর শিপ রেজিষ্ট্রেশন, শিপিং বিজনেস পলিসি এবং World Trade পড়িয়েছেন। উনি প্রতি ক্লাসের আগেই ৫০-৬০টি স্লাইড সম্বলিত লেকচারের পিডিএফ ফাইল দিয়ে দিতেন এবং ক্লাসে সবাইকে তা পড়ে আসতে বলতেন। আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করতাম।
তো, একদিন তিনি আমাদেরকে একটা টপিক দিয়ে বললেন, এই টপিকে তোমাদেরকে একটা এসাইনমেন্ট করতে হবে। কিভাবে এসাইনমেন্ট করবা তার নিয়মাবলী মেইল করে জানিয়ে দিবো। আমরা তা এত গায়ে নিলাম না। কারণ এমন এসাইনমেন্ট তো কতই করেছি, অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে, কিছু কপি-পেস্ট করে একজনে রেডি করবো, বাকিরা তার থেকে দেখে তৈরি করে ফেলবো। যেটা ফাঁকিবাজ ছাত্র বলে দেশ থাকতে হরহামেশাই করতাম। 
কিন্তু এই প্রফেসরের এসাইনমেন্ট করার নিয়মাবলি দেখে মাথায় যেন বাজ পড়লো। এসাইনমেন্ট হতে হবে সর্বোচ্চ দুই পেইজের, এক পেইজ বাড়ানো যাবে তা কেবল রেফারেন্স দেয়ার জন্য। আর এই দুই পেইজের এসাইনমেন্ট লিখার আগে ঐ টপিক রিলেটেড ৩০টি আর্টিকেল সংগ্রহ করে প্রফেসরকে মেইল করতে হবে, তিনি সবগুলো আর্টিকেল দেখে কনফার্ম করলে আমাকে ৩০টি আর্টিকেল পড়ে তার সারমর্ম বের করে তা দিয়ে দুই পেইজের এসাইনমেন্ট রেডি করতে হবে, এবং তা আবার প্লেজিয়ারিজম চেক করে সাবমিট করতে হবে এবং ক্লাসে প্রেজেন্ট করা লাগবে, প্রফেসরসহ ক্লাসের যে কেউ এই নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন করবে। আর এটাই আমার এই সাবজেক্টের ফাইনাল এক্সাম। শুনতে অনেক সহজ মনে হলেও, ব্যাপারটা আসলে ব্যাপক প্যারার ছিলো।
সুতরাং এখানে পড়ালেখা করা ছাড়া ফাঁকিবাজি করে পার হওয়ার রাস্তা এমনভাবে বন্ধ করা যে, আপনাকে খাটতেই হবে। কোনো সুযোগ নাই। তবে আপনার খাটতে এমনিতেই ইচ্ছা করবে, কারণ প্রফেসররা এত বেশি ফ্রেন্ডলি, মনে হবে তিনি আপনার বন্ধু, হঠাৎ ইচ্ছা করলো, ক্লাস শেষে সবাইকে নিয়ে আড্ডা দিতে বের হয়ে যাবে। কিন্তু উনার প্রোফাইল লিখতে গেলে দশ পেইজও কুলায় না।
আচ্ছা এবার আমেরিকান প্রফেসর থেকে জাপানি প্রফেসরের কাছে আসি। জাপানিরা যে কত বেশি সময়ানুবর্তী এবং পরিশ্রমী তার কিছুটা শেখার সুযোগ হয়েছে জাপানি প্রফেসর মাকুতা সেতার কাছ থেকে। তিনি আমাদের দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগর নিয়ে বিরোধ বিষয়ক কেইস স্টাডি বেইজড লেকচার দিয়েছেন। আমি কোনোদিন উনার আগে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারিনি। একেবারে জাস্ট টাইমে ক্লাসে আসতেন, নির্দিষ্ট সময় থেকে এক মিনিটও বেশি নিতেন না। চমৎকার ইংরেজিতে এত সুন্দরভাবে ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে লেকচার দিতেন তিনি, এক কথায় মুগ্ধ। তবে মজার ব্যাপার হলো, উনি যে ক্লাসটি নিয়েছেন, তা কোনো সাবজেক্ট নয়, আসলে তা একটা সাবজেক্টের একটা চ্যাপ্টার মাত্র।
আমাদের ডিপার্টমেন্টে একেক চ্যাপ্টার পড়ানোর জন্য একেক দেশ থেকে একেকজন এক্সপার্ট এসেছিলেন। মাত্র ৫টি বিষয় পড়িয়েছে ১৪ জন প্রফেসর। এর কারণ হচ্ছে, যে সাবজেক্টের যে পার্ট যিনি ভালো পারেন, তাঁকে দিয়ে লেকচার দেয়ানো হয়েছে এবং কারোর লেকচারই এক সপ্তাহের কম ছিলো না। এই জন্য আমরা কোনো কোনো সাবজেক্টের জন্য ৩/৪ জন প্রফেসরও পেয়েছি। এতে করে আমাদের প্রতিটা সাবজেক্ট এত ক্লিয়ার হওয়ার সুযোগ হয়েছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। 
উদাহরণসরূপ বলা যায়, সমুদ্রের নাবিকদের ও ক্রুদের অধিকার এবং কর্তব্য নিয়ে যিনি পড়িয়েছেন তিনি লম্বা সময় ধরে সাগরে ছিলেন, নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করেছেন, রিসার্স করেছেন। উনার বাস্তব অভিজ্ঞতায় সামুদ্রিক জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সমুদ্রসীমা ও তাদের প্রণীত বিধিমালা পড়াতে একজন প্রফেসর এসেছিলেন ব্রিটেন থেকে। তিনিও চমৎকার মানুষ, লন্ডনে বাঙালি কমিউনিটির কাছাকাছি থাকায় বাংলাদেশ সম্পর্কে চমৎকার ধারণাও আছে উনার।
আরেকটি সাবজেক্ট মেরিটাইম ও গ্লোবাল সিকিউরিটি নিয়ে পড়াতে এসেছিলেন তার্কির নৌবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড, উনার টাস্কও ছিলো অসাধারণ। ওপেন বুক পরীক্ষা পদ্ধতির সাথেও পরিচয় করিয়ে দেন তিনি।
তারপর সসমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ সংক্রান্ত একটি সাবজেক্ট পড়িয়েছেন একজন রানিং তার্কিশ এম্বাসেডর। যিনি এমন অনেক বিরোধ মীমাংসার নেগোসিয়েশনে ডিপ্লোমেট হিসেবে ছিলেন। যেহেতু এম্বাসেডরের কথা আসলো, তাহলে উনার পরীক্ষা সিস্টেম নিয়ে বলি। উনি লেকচারের শুরুতে ঘোষণা দিয়েছিলেন, এক্সাম হবে দুইভাবে লিখিত এবং সামিট স্টাইলে, সুতরাং ভালোভাবে লেকচারে মনোযোগ দাও।
আচ্ছা যাক কোর্স শেষ, এবার কি শিখছি তা প্রমাণের পালা। পরীক্ষার হলে এসে দেখি প্রশ্নপত্র দিয়েছেন ১০ পৃষ্ঠার। কিন্তু পরীক্ষার সময় মাত্র ৪০ মিনিট। ১০ পৃষ্ঠার প্রব্লেমেটিক ইংরেজি প্রশ্ন পড়তেই তো ৩০ মিনিট লাগবে। কখন উত্তর করবো! কিন্তু সত্যি বলতে কি, তিনি এত চমৎকার করে প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন, উনার ২৮০টি স্লাইডের ৭টি লেকচারের প্রতিটি থেকে বিভিন্ন প্যাটার্নের প্রশ্ন করেছেন, যা ভালোভাবে লেকচার বুঝলে ইজিলি ৪০ মিনিটে উত্তর করা যায়, কারণ এই এক্সামের জন্য আলাদা কোনো পেপার নেই, প্রশ্নপত্রেই উত্তর দিতে হবে। যাক, ৩০ মিনিটেই শেষ করেছিলাম। পরীক্ষার প্রশ্নের উপরে কি লেখা ছিলো, তা দেখতে ফিচার ইমেজে চোখ বুলান।
উনার লিখিত পরীক্ষা নেয়া তো শেষ, বাকি রইলো সামিট স্টাইলে ওরাল এক্সাম। হাতেকলমে শেখার জন্য এই পদ্ধতি। আমাদের পুরো ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দুইটি ভাগে ভাগ করে দুইটি দেশ বানিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা, দ্বীপ, মাছ ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ। এখন আমাদের ক্লাসে গঠিত এই দুইদেশের মধ্যে নেগোসিয়েশন মিটিং করে এই সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে। তা অবশ্যই আইনসংগত এবং যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। পৃথিবীতে এমন সমস্যা ও নেগোসিয়েশনের উদাহরণ শত শত আছে।
আমরা টানা তিনদিন নেগোসিয়েশন মিটিং করে সমাধানে আসি। তিনদিনই এম্বাসেডর স্যার আরও কিছু গেস্ট নিয়ে উপস্থিত থেকে এক্সামিনারের ভূমিকা পালন করছেন এবং আমরা এই সাবজেক্টে ক্লাস করে কি শিখেছি তা দেখেছেন। একজন রিয়েল ডিপ্লোমেট কিভাবে কাজ করেন, সুন্দর প্রেজেন্টেশন করে কিভাবে অন্যকে কনভিন্স করা যায় এবং নিজের দেশের স্বার্থে ভুমিকা রাখা যায় তার বাস্তব শিক্ষা এই এক্সাম। ও হ্যাঁ, এটাই কিন্তু ফাইনাল এক্সাম।
এমন সুন্দর সিস্টেমের কারণে যে কারোর এমনিতেই পড়তে ইচ্ছা করবে। আর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, ল্যাতিন আমেরিকা এবং এশিয়া মিলে ১১টি দেশের মোট ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আমাদের ক্লাস। আসলে পরিবেশই পড়ার জন্য উৎসাহিত করে। ক্লাসগুলো প্রাণবন্ত হতো আরও একটি কারণে, প্রতিটি ক্লাসে হয়তো মাস্টার্সের অন্যান্য ব্যাচের বা অনার্স শেষ বর্ষের কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের সাথে ক্লাস করতো। যেখানে তারা না আসলেও চলে, তবুও সবার এক্সেস ছিলো বিধায় তারা নতুন কিছু শেখার সুযোগ মিস করতো না। যেটা আমি দেশে থাকতে কখনো করিনি কিংবা কল্পনাতেও আসেনি।
এটা সত্য এখানে কষ্ট করা ছাড়া রেজাল্ট ভালো করা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়, কারণ আমাদের বাংলাদেশী একজন ছাত্রই আংকারা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্সে সিজিপিএ- ৪.০০ (স্কেল- ৪.০০) পেয়ে প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল পেয়েছেন গতবছর। অন্যান্য ইউনিভার্সিটিতেও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আমাকেও তাদের কাতারে রেখেছেন।
যাক, অল্প কয়দিনে বিস্তর অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্পের ঢালি খুলে বসার কারণ হচ্ছে, অনেককে বলতে শোনা যায়, তার্কিতে আর কি পড়ালেখা হয়! তাই বললাম আর কি অল্পস্বল্প যা হয়, তা নিয়ে। অবশ্যই আমার প্রিয় মাতৃভূমিকে ছোট করার জন্য নয়, আমার দেশের প্রিয় শিক্ষকরাও অনেক পরিশ্রম করেন, অনেক সুন্দরভাবে পড়ান, উনারা ভালো পড়ান বলেই আমাদের এখন একটু বড় পরিসরে পড়ার সুযোগ হচ্ছে, সকল প্রিয় শিক্ষকদের জন্য ভালোবাসা। তবে মূল গলদ আমাদের শিক্ষা পদ্ধতিতে, যাইহোক, সেটা ভিন্ন আলাপ।
আর হ্যাঁ, তার্কির এডুকেশন কারিকুলাম এবং ইউরোপের এডুকেশন কারিকুলাম একই। তাই ইরাসমুস এর মাধ্যমে Exchange Program-এ অনেকে ইউরোপ থেকে এখানে আসে আবার অনেকে এখান থেকে ইউরোপে যায় পড়ার জন্য। তবে দিনশেষে কথা একটাই, পৃথিবীর যেখানেই যান, পড়ালেখা আপনার কাছে। আপনি না পড়লে কেউ জোর করে পড়াতে পারবে না। ফাঁকিবাজি পৃথিবীর সব জায়গায়ই করা যায়, কোথাও কম কোথাও বেশি। প্রকৃতপক্ষে আসল ফাঁকিটা নিজেকেই দেই আমরা।
নোট: উপরে বর্ণিত সকল কিছু আংকারা ইউনিভার্সিটির মেরিটাইম 'ল ডিপার্টমেন্টকে বেইস করে লিখা। তাই ইউনিভার্সিটি, সাবজেক্ট ও ক্লাসভেদে কিছু বিষয় ভিন্ন হতে পারে।
Share:

৩টি মন্তব্য:

সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচিত পোস্ট

এক অভাগিনীর গল্প শুনি

মা-বাবার প্রথম সন্তান হয়ে দুনিয়ায় আসা শ্যাম বর্ণের মেয়েটির শৈশব, কৈশোর কাটে নানা গঞ্জনায়। যৌবনে পা দিতে দিতেই দেশে যুদ্ধ বেধে যায়। সে এ...

সংগ্রহশালা

আমাকে লিখুন

নাম

ইমেল *

বার্তা *