বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাবিষয়ক
ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীই প্রচলিত এবং একই ধাঁচের সুপারিশপত্র
ব্যবহার করে আবেদনপত্রের সঙ্গে। এসব সুপারিশপত্রের বক্তব্যের ধরন প্রায় একই রকম। অর্থাৎ
শিক্ষক অভিন্ন নমুনায় নাম পরিবর্তন করে একাধিক শিক্ষার্থীকে সুপারিশপত্র দিয়েছেন।
এর ফলে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসংশ্নিষ্ট
কর্মকর্তার কাছে আবেদনকারীরা গ্রহণযোগ্যতা হারায়। যোগ্যপ্রার্থীর আবেদন নাকচ হতে পরে
এমন কারণে। গবেষণার জন্য রিকমেন্ডেশন লেটার যুক্তরাষ্ট্র উচ্চশিক্ষা বা গবেষণার ক্ষেত্রে
দরকার হয় রিকমেন্ডেশন লেটার বা সুপারিশপত্র, বিষয়টি নিয়ে অনেক প্রার্থী বা শিক্ষর্থীর
স্পষ্ট ধারণা নেই। রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে বিভ্রান্তি কমাতে নিজের ওয়েবসাইটে পরামর্শমূলক
এই লেখাটি লিখেছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর শিক্ষার
ক্ষেত্রে ভর্তির আবেদনের সময় রিকমেন্ডেশন লেটার বা সুপারিশপত্র দরকার হয়। অনেক সময়
দেখা যায়-রিকমেন্ডেশন লেটারের প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপন এতটা ভালো হয়, যার ফলে, ভর্তিচ্ছুর
কোনো দুর্বলতাকে আর বিবেচনা না করে তাকে যোগ্য হিসেবে ধরা হয়। আবার, ভর্তিচ্ছুক যথাযথ
যোগ্যতা থাকার পরও রেকমেন্ডেশন লেটারের উপস্থাপন খারাপ কিংবা যথাযথ না হওয়ার কারণে
ভর্তিচ্ছু বাদ পড়ে যান। ভর্তিচ্ছুকে সাধারণত ২/৩টি রিকমেন্ডেশন লেটার জমা দিতে হয়।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বা গবেষণার মান সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্যই এসব রেকমেন্ডেশন
লেটার বা পত্র চাওয়া হয়।
শিক্ষার্থীকে ভালোভাবে জানেন, এমন শিক্ষকরাই
সাধারণত এই শিক্ষার্থীর জন্য সুপারিশ (রিকমেন্ডেশন) করে পত্র দেন। ধরুন, বাংলাদেশের
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করার পর বিদেশে গবেষণার জন্য আবেদন করার। সময় বাংলাদেশের
যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী পাস করেছে, সেখানকার পরিচিত শিক্ষকের কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন
লেটার নিতে হবে। শিক্ষার্থীর জানাশোনা বা মেধা কেমন, সুযোগ পেলে শিক্ষার্থী কী কী করার
যোগ্যতা রাখে-তা এসব সুপারিশপত্রে উল্লেখ থাকে। বিদেশে ভর্তির আবেদন করা শিক্ষার্থীদের
যোগ্যতা যদি অ্যাকাডেমিক ফলাফলের ভিত্তিতে করা হয়, তাহলে বাছাই করা খুব কঠিন হবে।
কারণ দেখা যাবে, যোগ্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারিত আসনের চেয়ে অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে রিকমেন্ডেশন লেটারের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাই করা হয়। এ কারণে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তির আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদনের কাগজপত্র বিশেষ করে সুপারিশপত্র ভালো করে দেখে। রিকমেন্ডেশন লেটার তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কিছু কমন ভুল করেন। এসব চিঠিতে অনেক তথ্যের অমিলও থাকে। যার করণে অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় মেধাবী হলেও রিকমেন্ডেশন লেটারের ভুলের কারণে ভর্তি হতে পারেন না। সাধারণত যেসব ভুল বেশি দেখা যায়
১. রিকমেন্ডেশন লেটার নিজে নিজেই লিখেন:
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের
কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার না নিয়ে নিজে নিজে তৈরি করে তা আবেদনের সঙ্গে জমা দেন।
আবার অনেক সময় শিক্ষকের কাছে রিকমেন্ডেশন লেটারের জন্য গেলে শিক্ষক বলেন-রিকমেন্ডেশন
লেটার নিজেই তৈরি করে নিয়ে এসো, দেখে স্বাক্ষর করে দেবো। পরে শিক্ষক রিকমেন্ডেশন লেটার
ভালো করে দেখেন না, কোনো কিছু সংযোজন কিংবা মূল্যায়ন কৱেই স্বাক্ষর করে দেন। এটা ভুল
পদ্ধতি। এসব কারণে রিকমেন্ডেশন লেটারে স্বতন্ত্র বা উপযোগী অনেক কিছুই থাকে না। বাংলাদেশের
শিক্ষর্থীদের মতো দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরাও এই ভুলটি করেন। এসব
সুপারিশপত্র পড়েই বুঝা যায় যে এতে নতুন কিছু নেই। তাই পরামর্শ-সুপারিশপত্র এমন শিক্ষককে
দিয়ে লেখানো উচিত, যিনি গুরুত্ব দিয়ে চিঠি লিখে দিবেন। পত্র খুব বড় করার দরকার নেই
। যতটুকু লিখলে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে, ততটুকু লিখলেই চলবে।
২. কপি-পেস্ট:
আরেকটি কমন সমস্যা হচ্ছে-এক শিক্ষার্থীর
সুপারিশ পত্র অন্য শিক্ষার্থীরা দেখে কপি-পেস্ট করেন। শুধু নাম ও সামান্য পরিবর্তন
করে আবেদন জমা দেন। তাই এখানেও নতুন কিছু থাকে না। এসব চিঠি দেখেও অভিজ্ঞরা বুঝে ফেলেন
যে এগুলো কপি-পেস্ট। অন্য শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার নেয়া যেতে পারে
শুধু ধারণার জন্য, কপি করার জন্য না। আবার অনেকে ইন্টারনেট থেকে সার্চ করে নমুনা রিকমেন্ডেশন
লেটার দেখে সামান্য পরিবর্তন করে জমা দেন। এটাও ঠিক না। এখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি
একই বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী একই রকম চিঠি পাঠায়, তাহলে সমস্যাটা
কোথায় বুঝতে পারছেন তো? নকলের দায়ে এদের আবেদনপত্র একেবারে পত্রপাঠ বাতিল করা হতে
পারে। কাজেই কোনো অবস্থাতেই এরকম কপি-পেস্ট যাতে না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখবেন।
৩. অপ্রাসঙ্গিক বিষয়:
অনেক সময় সুপারিশপত্রে এমন কিছু থাকে,
যা প্রাসঙ্গিক না। আবার সাধারণ বা মুখস্থ কথাবার্তাও লেখা হয়। যেমন-সে আমার পরিচিত
ও খুব পছন্দের ছাত্র। খুবই মেধাবী। ক্লাসের পরীক্ষায় ভালো করতো ইত্যাদি। এসব কথা থেকে
ভর্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গবেষণার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাবেন না। এসব কমন
কথা না লিখে যদি বিশেষ কোনো ঘটনা বা উদাহরণের কথা বলা হয়, তাহলে তা ভর্তি সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
যেমন: একটা প্রজেক্টে এই ছাত্রটি বেশ ইন্টারেস্টিং
উপায়ে সমস্যার সমাধান করেছে, অথবা তার সমাধানের উপায় খুব উপযোগী ইত্যাদি। অথবা, কোনো
প্রজেক্টের কাজ দিলে সে দায়িত্ব নিয়ে ভালোভাবে করে। বিশেষ কিছু পয়েন্ট থাকলে ভর্তির
সময়ে খুব ভালো কাজ দেয়। যেমন-ছাত্রটি অধ্যবসায়ী, পরিশ্রমী, শিখতে আগ্রহী, হাতে ধরে
শেখাতে হয় না, সে স্ট্যাটাস ইত্যাদি।
৪. অনলাইনে পাঠাবেন, নাকি ডাক যোগে?
ভর্তির সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শত শত
আবেদন জমা পড়ে। এক সঙ্গে এত আবেদন দেখতে গিয়ে ভর্তি অফিসের কর্মীদের হিমশিম খেতে
হয়। এছাড়া প্রায়ই আবেদনের কাগজপত্র হারিয়ে যায়। আর অসম্পূর্ণ আবেদন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
আমলেই নেয়া হয় না, যাচাইয়ের আগেই বাতিল করে দেয়া হয়। এসব ঝামেলা এড়াতে এখন অনেক
বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি আবেদন করতে হয় অনলাইনে বা ইমেইলে। রিকমেন্ডেশনের ক্ষেত্রেও
তা-ই। মানে ইমেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রিকমেন্ডেশন পাঠানোর সুযোগ থাকে। তাই অনলাইনে
পাঠানোই নিরাপদ।
৫. কারা সুপারিশ করবেন?
সাধারণত শিক্ষকদের কাছ থেকেই সুপারিশ নিতে
হয়। তবে যারা ইতোপূর্বে চাকরি করেছেন, তারা চাইলে তাদের বসের কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন
লেটার বা সুপারিশপত্র নিতে পারেন। ধরুন আপনি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে আগে চাকরি করেছেন।
সেখানে আপনার পারফরম্যান্স কেমন ছিল, গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলো কী কী-তা তুলে ধরবে আপনার
বস। তবে অবশ্যই যৌক্তিক ও গুছালো কথা থাকতে হবে। পড়ে যাতে মনে না হয়-এসব মনগড়া মুখস্থ।
নিচে একটি রিকমেন্ডাশন লেটারের নমুনা দেয়া
হলো-
Letter
of Recommendation
It is my great
contentment to recommend Amjad Khan who completed his B.Sc. Degree in Civil
Engineering from University of Asia Pacific in April 2013. I know him for the
last five years as a head of department and his teacher in his undergraduate
courses.
Amjad Khan followed by
excellent academic records, maintained his outstanding performance throughout
his 4-year study in this university. His CGPA is 3.96 (out of 4.00 scale) and
he was selected to be in Vice Chancellor's list for several times during his stay
in this university. His position is 2nd out of 65 students and hence I would
rank his among 3% topmost student of Civil Engineering Department. He is now
working as a Structural Designer in the Rangs Properties Limited. He worked as
a Junior Designer in the Tropical Homes Limited, one of the prominent
construction company of the Bangladesh, just after completion of his course.
Besides that, his part
time affords in ATI Training and Consultants as a Guest Lecturer have still
attached him with academy. He has published a few technical articles related to
nonlinear analysis of structures from different country. While performing his
academic activities, I found Amjad Khan very sincere, perceptive and always
devoted to his works. He is efficient and helpful while working in a group. To
the best of my knowledge Mr. Khan is honest, amiable, maintains discipline of
his institution very strictly and can work under intense pressure.
His interest in
attempting any challenging academic problem and his originality of thinking
make his potential person to pursue research and innovative work. Besides, Mr.
Dinar was well known in the campus for his active participation in
extra-curricular activities. He participated in co-curriculum programs
organized by the department of Civil Engineering.
I, therefore, strongly
recommend Mr. Khan for the admission in graduate program with appropriate kind
of assistance.
I wish Mr. Khan all the
best in his academic and personal life.
Dr.
M. R. Kabir
Pro
V.C. & Head of Department
Email:
……………………
Department
of Civil Engineering University of Asia Pacific (UAP)
Road
No. 7, House No. 8A Dhanmondi R/A, Dhaka Bangladesh
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন